“২০২৫ সালে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির পেছনে থাকা কারণগুলো বিশ্লেষণ করা হলো — কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি, মুদ্রা অবমূল্যায়ন, বিনিয়োগ প্রবণতা, বৈশ্বিক অস্থিরতা ও আরও ৩০টি উপ বিষয়সহ একটি বিস্তারিত গাইড।”
সংক্ষিপ্ত স্পেসিফিকেশন (Brief Specification)
| বিষয় | বিবরণ |
|---|---|
| বিষয় | ২০২৫ সালে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির বিশ্লেষণ |
| শব্দসংখ্যা | প্রায় ৫,০০০ শব্দ |
| মূল ফোকাস | আন্তর্জাতিক ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে কারণ বিশ্লেষণ |
| কাঠামো | ইন্ট্রো, সাবটাইটেলবদ্ধ বিশ্লেষণ, FAQ, উপসংহার |
| SEO উপাদান | মূলকীওয়ার্ড, সাবটাইটেল ট্যাগ, মেটা ডিসক্রিপশন, আউটবাউন্ড লিংক |
| পাঠক | বিনিয়োগকারী, অর্থনীতিতে আগ্রহীদের জন্য |
| আপডেট তথ্যসূত্র | ২০২৫ সালের গোল্ডহাব (World Gold Council), Reuters, TradingEconomics, Investopedia ইত্যাদি |
Introduction (প্রারম্ভ)
স্বর্ণ — প্রাচীনকাল থেকেই ধন, স্থিতিশীলতা ও মূল্য সংরক্ষকের প্রতীক ছিল। আজকের বিশ্বে, বিশেষ করে ২০২৫ সালে, এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে: যেখানে একের পর এক রেকর্ড ছুঁয়ে যাচ্ছে স্বর্ণের বাজার।
বাংলাদেশেও ‘ভরি’ ইউনিটে স্বর্ণের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো — এই ঊর্ধ্বগতি কী কারণে?
এই প্রবন্ধে আমরা গভীরে যাব — কারণ, প্রভাব, ঝুঁকি ও ভবিষ্যৎ প্রবণতা নিয়ে বিশ্লেষণ করব। পাশাপাশি, পাঠক হিসেবে আপনি জানতে পারবেন বাংলাদেশ এবং বৈশ্বিক বাজারে কী কী বিষয় বিবেচনায় রাখা জরুরি।
- গ্লোবাল বিনিয়োগ চাহিদি বৃদ্ধি
বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকি কমাতে এবং পোর্টফোলিও বৈচিত্র্য আনতে স্বর্ণের প্রতি ঝুঁকে চলেছেন। - কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ ক্রয়
অনেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ বৈচিত্রকরণে অংশ নিচ্ছে — আমদানির পাশাপাশি, তারা স্বর্ণ সংগ্রহ করেছে। - মুদ্রার অবমূল্যায়ন (Currency Depreciation)
বিশেষ করে বাংলাদেশে, টাকার অবমূল্যায়ন সরাসরি স্বর্ণের স্থানীয় দামের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। - মুদ্রাস্ফীতি ও রিয়েল সুদের হার (Inflation & Real Interest Rates)
যদি মুদ্রাস্ফীতি দ্রুত বাড়ে এবং সুদের হার কম বা নেতিবাচক হয়, স্বর্ণ আকর্ষণ বাড়ে। - যুক্তরাষ্ট্র ডলারের দুর্বলতা (Weak USD)
স্বর্ণ সাধারণত USD এর বিপরীতে মূল্য বাড়ে — USD দুর্বল হলে স্বর্ণের দাম আগাপিছে। - আর্থিক অস্থিরতা ও বাজার উদ্বেগ
গ্লোবাল অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, যুদ্ধ, সঙ্কট বাজারে স্বর্ণকে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে তুলে ধরেছে। - প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ ও অয়নব্রেক আউট (Technical Breakouts)
চার্ট, মোমেন্টাম ও ব্রেকআউট সিগন্যালগুলি বাজারে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে। - সাম্প্রতিক সুদের নীতির পরিবর্তন (Monetary Policy Shifts)
ফেড বা অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি সুদের হার কমায়, স্বর্ণে আকর্ষণ বাড়তে পারে। - ETFs ও স্বর্ণ বিনিয়োগ তহবিল প্রবাহ (ETF Flows)
স্বর্ণ-সমর্থিত ETFs–এ নগদ প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বাজারে চাহিদা বাড়িয়েছে। - বিশ্লেষক ও ইনস্টিটিউশনাল প্রবণতা (Analyst Sentiment)
জেপি মরগ্যান, গোল্ডম্যান স্যাকস এবং অন্যান্য বিশ্লেষকরা উচ্চ রূপে দাম প্রক্ষেপণ করছেন। - জমিন ও খনিজ উত্তোলন সীমাবদ্ধতা (Mining & Supply Constraints)
স্বর্ণ উত্তোলন হার সীমিত — খনি খরচ, পরিবহন খরচ ও আইনগত বাধা। - শিল্প ও জুয়েলারি চাহিদি (Jewellery & Industrial Demand)
স্বর্ণের জুয়েলারি ও প্রযুক্তি খাতে চাহিদা বাড়লে দাম আরও উর্ধ্বগতিতে যেতে পারে। - সরবরাহ ঝুঁকি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ (Supply Risk & Export Controls)
কিছু দেশ স্বর্ণ রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারে, যা সরবরাহ সীমিত করে। - স্টক-পজিশনিং ও স্পেকুলেটর প্রবণতা (Speculators & Positioning)
বড় স্পেকুলেটররা দীর্ঘ অবস্থান নিচ্ছেন, যা দামচাপ বাড়াতে পারে। - লোকাল বাজার মুনাফা ও রূপান্তর চার্জ (Local Margins & Making Charges)
বাংলাদেশে “মেকিং চার্জ” ও আয়াত শুল্ক মূল্যকে প্রভাবিত করছে। - কর ও রাজস্ব নীতি পরিবর্তন (Taxes & Regulatory Changes)
সরকারের করনীতি বা শুল্ক পরিবর্তন স্বর্ণে অংশীদারদের মনোভাব পরিবর্তন করতে পারে। - আর্থ-রাজনৈতিক পরিবর্তন ও ভোটপরবর্তী অনিশ্চয়তা
নির্বাচন, রাজনৈতিক উত্তেজনা ও নীতি পরিবর্তন স্বর্ণকে নিরাপদ আশ্রয় হিসাবে যেকোনও মুহূর্তে জনপ্রিয় করতে পারে। - আলোচ্য আর্থিক চক্র (Business Cycle & Recession Risk)
রেসেশন ভয় বা মন্দার সম্ভাবনায় বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণ ধরে রাখতে চাইবে। - ঋণ বোঝা ও সরকারি বাজেট ঘাটতি (Debt Burden & Fiscal Deficits)
উচ্চ ঋণ এবং বাজেট ঘাটতি মুদ্রানীতির দিক পরিবর্তন করতে পারে এবং স্বর্ণকে বৈশ্বিক হেজ হিসেবে তুলতে পারে। - ডিজিটাল মুদ্রা ও বিকল্প বিনিয়োগ (Crypto & Alternative Assets)
যদিও ক্রিপ্টো ইত্যাদি বিকল্প আছে, অনিশ্চয়তার সময় স্বর্ণের প্রাধান্য বজায় থাকে। - মুদ্রা পলিসি সম্মেলন ও কোপন (Currency Policy Coordination / FX Intervention)
কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি বিদেশি মুদ্রায় হস্তক্ষেপ করে, তা স্বর্ণকে প্রভাবিত করতে পারে। - মুক্ত বাজারা (Open Markets) ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ (Capital Controls)
সীমান্ত বন্ধ বা পুঁজি নিয়ন্ত্রণ হলে শিল্প ও বিনিয়োগ প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। - আন্তঃদেশীয় বিনিময় হার শক (Cross-Currency Shocks)
ইউরো, ইউয়ান বা অন্যান্য মুদ্রার অস্থিরতা USD-Gold সম্পর্ককে প্রভাবিত করে। - সাধারণ বিনিয়োগ প্রবণতা ও কেন্দ্রীয় ধন স্থানান্তর (Wealth Shift to Real Assets)
মানুষ বেশি ধনকে “বাস্তব” ধন-রূপে রাখতে চান — যেমন স্বর্ণ ও রিয়েল এস্টেট। - বাজার মনোবল ও ভয়–লাম্বা (Sentiment & Fear Index)
ভয়ের মুহূর্তে “উড্ডয়ন (flight to safety)” প্রবণতা স্বর্ণকে আকর্ষণীয় করে। - মিডিয়া ও খবর সংবেদনশীলতা (Media & News Sentiment)
সংবাদশিরোনাম, অর্থনৈতিক রিপোর্ট ও বিশ্লেষণ বাজারে প্রভাব ফেলে। - ভবিষ্যৎ আশাব ও প্রত্যাশা (Expectations & Forward Guidance)
ফেড/বাংকারা ভবিষ্যৎ নীতি নির্দেশিকা দিলে বিনিয়োগকারীরা আগের দিকেই দ্রুত সাড়া দিতে পারে। - কার্বন ও পরিবেশ নীতি (ESG & Environmental Regulations)
খনি ও পরিবহন ক্ষেত্রে পরিবেশনীতি কড়াকড়ি করলে খরচ বাড়তে পারে। - বিনিয়োগকারীর শিক্ষাগত উন্নয়ন ও সহজ প্রবেশ (Retail Access & Education)
অনলাইন মুদ্রা বিনিময়, ডিজিটাল স্বর্ণ ক্রয় প্ল্যাটফর্ম ইত্যাদির কারণে সাধারণ মানুষও অংশ নিচ্ছে। - সাময়িক সংশোধন ও রক্ষণশীল চাপ (Corrections & Profit Taking)
কখনো রূপান্তর বা মুনাফা উত্তোলন স্বর্ণের দামকে সাময়িকভাবে আটকে দিতে পারে।
গ্লোবাল বিনিয়োগ চাহিদি বৃদ্ধি
২০২৫ সালে, বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বাজার ও অন্যান্য রিস্ক সম্পদ থেকে দূরে সরে আসছেন। বিভ্রান্তি, মন্দার আশঙ্কা ও বাজারের অতিরিক্ত ওঠ — এমন পরিবেশে তারা “নিরাপদ আশ্রয়” খুঁজছেন — এবং স্বর্ণ সেই ভূমিকা নিতে সক্ষম।
বিশ্লেষকরা দেখাচ্ছেন, ২০২৫’এর প্রথমার্ধেই স্বর্ণ ডলার ভিত্তিতে প্রায় ২৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি একটি শক্তিশালী সংকেত যে বিনিয়োগ চাহিদা বড় ভূমিকা নিচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ ক্রয়
বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকরা রিজার্ভ বৈচিত্র্যকরণের অংশ হিসেবে স্বর্ণ সংগ্রহে প্রবল অবস্থানে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রয় সাধারণত বড় পারমিন্টাথমিক সংকেত দেয় — এবং বাজারে স্বর্ণের সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্যকে সামনে আনে।
মুদ্রার অবমূল্যায়ন (Currency Depreciation)
বাংলাদেশে টাকার অবমূল্যায়ন স্বর্ণের স্থানীয় দামে একটি ড্রাইভার হিসেবে কাজ করে। যখন স্থানীয় মুদ্রার মান কমে যায়, একই বৈশ্বিক স্বর্ণের দাম বেশি টাকায় পরিমাপে।
যদিও আন্তর্জাতিকভাবে স্বর্ণের দাম ডলারে নির্ধারিত হয়, মুদ্রার দুর্বলতা স্থানীয় বাজারকে উর্ধ্বমুখী চাপ দেয়।
মুদ্রাস্ফীতি ও রিয়েল সুদের হার
মুদ্রাস্ফীতি যদি দ্রুত বাড়ে, তবে অন্যান্য বিনিয়োগ যেমন বন্ড বা সঞ্চয় অ্যাকাউন্টের বাস্তব রিটার্ন নেমে আসে। এই পরিস্থিতিতে স্বর্ণকে “হেজ” হিসেবে দেখা হয়।
রিয়েল সুদের হার (নমিতিনি) নেতিবাচক হলে — অর্থাৎ সুদের হার মুদ্রাস্ফীতির চেয়ে কম হলে — স্বর্ণের আবেদন আরও বাড়ে।
যুক্তরাষ্ট্র ডলারের দুর্বলতা
ডলারের দুর্বলতা স্বর্ণের মূল চালক। ২০২৫ সালের একাংশে USD কমজোরি দেখা গেছে, যা স্বর্ণকে তুলনামূলকভাবে সস্তা করেছে।
যদি ডলার শক্তিশালী হতো, সেটা স্বর্ণের দামে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারত।
আর্থিক অস্থিরতা ও বাজার উদ্বেগ
যেকোনো শঙ্কা — যেমন যুদ্ধ, ঋণ সঙ্কট, মন্দা আশঙ্কা — বিনিয়োগকারীদের “সেফ হেভেন” চান ক্যাটালিস্ট হিসেবে কাজ করে। স্বর্ণ সেই ভূমিকা পালন করে।
প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ ও অয়ন ব্রেকআউট
বাজার চার্ট গুলি দেখেছে যে, স্বর্ণ বহু অর্ধসীমা (resistance) ভেঙেছে, যা একটি “ব্রেকআউট প্রবণতা” নির্দেশ করে।
ট্রেডিং প্রযুক্তিবিদেরা RSI, MACD ও ভল্যুম টুল ব্যবহার করে, সম্ভাব্য রূপান্তর অঞ্চল চিহ্নিত করছেন।
সাম্প্রতিক সুদের নীতির পরিবর্তন
ফেড বা অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি সুদের হার কমানোর ইঙ্গিত দেয়, সেটি স্বর্ণকে সহায়ক হতে পারে।
২০২৫ সালে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, যা বিনিয়োগকারী মনকে এগিয়ে আসতে উৎসাহিত করেছে।
ETFs ও স্বর্ণ বিনিয়োগ তহবিল প্রবাহ
ETF-এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা সহজেই স্বর্ণে বিনিয়োগ করতে পারছেন। এই প্রবাহ বাজারে সরাসরি প্রতিফলন দেয়।
যদি ETF-এ নতুন পুঁজির প্রবাহ থাকে, তা বাজার মূল্যকে উপরের দিকে ধাক্কা দিতে পারে।
বিশ্লেষক ও ইনস্টিটিউশনাল প্রবণতা
বিশ্লেষক সংস্থাগুলোর পূর্বাভাস দামের উপরে ধারাবাহিকভাবে ওঠানামা করছে। যেমন, জেপি মরগ্যান ২০২৫ শেষ পর্যন্ত গড় দাম $3,675/oz প্রক্ষেপণ করেছে।
গোল্ডম্যান স্যাকস আরও উঁচু প্রক্ষেপণ করছে।
খনিজ উত্তোলন সীমাবদ্ধতা
স্বর্ণ উত্তোলন ও উৎপাদন সীমিত। খনি অবকাঠামো, পরিবহন ও আইনগত বাধা সঙ্গে যুক্ত খরচ বাড়ায়।
লাভ কম হলে উৎপাদক নতুন খনি ব্যবহারে সংকোচ করতে পারে, যা সরবরাহ সংকোচনের দিকে যেতে পারে।
জুয়েলারি ও প্রযুক্তি চাহিদি
জুয়েলারি শিল্প সব সময় স্বর্ণ চাহিদার বড় অংশ তৈরি করে। প্রযুক্তিগত প্রয়োগ যেমন ইলেকট্রনিক্সেও স্বর্ণ ব্যবহৃত হয়। এটি অতিরিক্ত চাহিদা সৃষ্টি করতে পারে।
সরবরাহ ঝুঁকি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ
কিছু দেশ স্বর্ণ রপ্তানির ওপর শুল্ক বা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারে — তখন আন্তর্জাতিক সরবরাহ সংকুচিত হতে পারে।
স্টক-পজিশনিং ও স্পেকুলেটর প্রবণতা
বড় স্পেকুলেটর (যেমন হেজ ফান্ড) দীর্ঘ পজিশন নিচ্ছে — যা বাজারে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
এই ধরণের ক্রিয়াকলাপ বাজার মনকে দ্রুতকেড়ে নিতে পারে।
স্থানীয় বাজার মুনাফা ও রূপান্তর চার্জ
বাংলাদেশে “মেকিং চার্জ” ও আয়াত শুল্ক সরাসরি খরচ বাড়ায়, যা শেষ ব্যবহারকারীর দামে প্রতিফলিত হয়।
কর ও নিয়ন্ত্রক নীতি পরিবর্তন
সরকার যদি কর বেড়ে দেয় বা নীতি পরিবর্তন করে, বিনিয়োগক ও বিক্রয় পরিকল্পনায় প্রভাব ফেলতে পারে।
রাজনৈতিক পরিবর্তন ও ভোটপরবর্তী অস্থিরতা
নিয়ন্ত্রণ পরিবর্তন, নীতি পরিবর্তন ও রাজনৈতিক উদ্বেগ স্বর্ণকে একটি আশ্রয় হিসেবে তুলতে পারে।
আর্থ-চক্র ও রেসেশন আশঙ্কা
মন্দার আশঙ্কা থাকলে বিনিয়োগারা রিস্ক সম্পদ থেকে সরে আসেন এবং সুরক্ষা সম্পদ যেমন স্বর্ণ অগ্রাধিকার পান।
ঋণ বোঝা ও বাজেট ঘাটতি
সরকার উচ্চ ঋণ ও বাজেট ঘাটতির কারণে মুদ্রানীতি নরম করার সুযোগ খোঁজে — যা মুদ্রাস্ফীতি ও মুদ্রা দুর্বলতার দিকে ধাক্কা দিতে পারে।
ক্রিপ্টো ও বিকল্প বিনিয়োগ
যদিও ক্রিপ্টো জনপ্রিয়, তার অস্থিরতা বেশি। কোনো শঙ্কা সময়ে মানুষ বেশিরভাগ সময় স্বর্ণের দিকে ঝুঁকেন।
মুদ্রা নীতি সমন্বয় ও FX হস্তক্ষেপ
কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে হস্তক্ষেপ করে, তা স্বর্ণ বাজারকে প্রভাবিত করতে পারে।
মুক্ত বাজার ও পুঁজিনিয়ন্ত্রণ
ক্যাপিটাল কন্ট্রোল বা পুঁজি প্রবাহ সীমাবদ্ধতা বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে।
আন্তঃদেশীয় মুদ্রা শক
যেমন ইউরো বা ইউয়ান-USD উদ্বেগ স্বর্ণ-USD সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে।
ধন স্থানান্তর প্রবণতা
ধনধরেরা বেশি “বাস্তব” ধন রাখতে সচেষ্ট — যেমন স্বর্ণ, যেকোনো মুদ্রা ঝুঁকি কমিয়ে।
বাজার মনোবল ও ভয়ের প্রভাব
স্টক মার্কেটে বড় পতন বা গুঞ্জন থাকলে মানুষ স্বর্ণের দিকে সরে আসে।
মিডিয়া ও খবরের সংবেদনশীলতা
সংবাদ শিরোনাম, বিশ্লেষণ ও অর্থনৈতিক রিপোর্ট বাজার মনকে প্রভাবিত করে।
ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা ও নির্দেশিকা
কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ভবিষ্যৎ নির্দেশিকা বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্তকে দ্রুত পরিবর্তন করতে পারে।
পরিবেশ নীতি ও ESG বাধা
হতে পারে খনি বা পরিবহন ক্ষেত্রে পরিবেশ-নীতির কারণে খরচ বেড়ে যাবে।
রিটেইল প্রবণতা ও শিক্ষা
ডিজিটাল স্বর্ণ প্ল্যাটফর্মগুলি সাধারণ মানুষকে বিনিয়োগে অংশ নিতে দিয়েছে — এটি চাহিদা বাড়িয়েছে।
সংশোধন ও মুনাফা উত্তোলন
যেকোন সময়ে মুনাফা উত্তোলন বা সংশোধন দামকে সাময়িকভাবে থামিয়ে দিতে পারে।
FAQ
প্রশ্ন ১: স্বর্ণ কখন সেরা বিনিয়োগ?
উত্তর: সাধারণত ভবিষ্যত মুদ্রাস্ফীতি, অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও মুদ্রা দুর্বলতার সময় স্বর্ণ ভালো কাজ করে।
প্রশ্ন ২: ২০২৫ সালে স্বর্ণ কি আরও বাড়বে?
উত্তর: বিশ্লেষকরা ২০২৫ শেষের দিকে দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা দেখেছেন — উদাহরণস্বরূপ জেপি মরগ্যান $3,675/oz প্রক্ষেপণ করেছে।
প্রশ্ন ৩: বাংলাদেশে স্বর্ণ কেন বেশি?
উত্তর: টাকার অবমূল্যায়ন, মেকিং চার্জ ও আয়াত শুল্ক মূল ভূমিকা রাখে।
প্রশ্ন ৪: স্বর্ণ কিনে কি ঝুঁকি আছে?
উত্তর: হ্যাঁ — দাম উর্ধ্বমুখী হলেও সংশোধন, করনীতি পরিবর্তন ও মুদ্রা হার প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রশ্ন ৫: ETF ও ফিজিক্যাল স্বর্ণের পার্থক্য কী?
উত্তর: ETF-এ একভাবে অংশীদার হতে পারবেন, কিন্তু বাস্তবভাবে স্বর্ণ হাতে নাও পাবেন। ফিজিক্যাল স্বর্ণ হাতে পাওয়া যায়, তবে স্টোরেজ, নিরাপত্তা ও খরচ বিবেচ্য।
আরো পড়ুন
- Lenovo IdeaPad XiaoXin 2025 Review: Full Specifications, Features, Performance & Buying
- Lenovo Yoga Slim 9i (14-inch, Gen 10) Review ‒ Specifications, Display, Battery, and Value in
- Lenovo IdeaPad 1 (2025) রিভিউ – ডিজাইন, ফিচার, দাম ও সম্পূর্ণ বিশ্লেষণ
- Lenovo Yoga Book 9i রিভিউ (2025) ফুল স্পেসিফিকেশন, ডুয়াল-স্ক্রিন ল্যাপটপ ফিচার,
- TikTok এর গোপন কৌশল নতুন ভিডিও শেয়ারিং
- J.P. Morgan Research Gold Forecast (JPMorgan Chase)
উপসংহার (Conclusion)
২০২৫ সালে স্বর্ণের দাম বাড়ার পেছনে শুধুমাত্র এক বা দুইটি কারণ নেই — এটি এক জটিল, আন্তঃসংযুক্ত প্রক্রিয়া।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি, মুদ্রাস্ফীতি, মুদ্রা দুর্বলতা, বিনিয়োগ প্রবণতা, প্রযুক্তিগত শক্তি, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা—এসব মিলিয়ে স্বর্ণ বাজারে এক যোগসূত্র সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে টাকার অবমূল্যায়ন ও স্থানীয় চার্জগুলোর প্রভাব এই বৃদ্ধিতে ত্বরক হিসেবে কাজ করেছে।
যদিও ভবিষ্যতে সীমাবদ্ধতা ও সংশোধনের ঝুঁকি থাকবেই — হিসেবে, বিনিয়োগকারী হতে হলে সতর্কতা ও বৈচিত্র্য অপরিহার্য।