
Cucumber শসার উপকারিতা ও অপকারিতা শসা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি সবজি। প্রায় সারা বছর জুড়েই এই সবজির চাষ হয়ে থাকে। Cucumber শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করবো। এটি অত্যন্ত সহজলভ্য এবং শারীরিক নানা উপকারিতার পাশাপাশি রূপচর্চায় এর ভূমিকা রয়েছে অপরিসীম।
Cucumber শসার উপকারিতা ও অপকারিতা
Cucumber শসার পুষ্টি উপাদান
শশায় রয়েছে ভিটামিন বি, থিয়ামিন (বি১), ফাইবার, প্রোটিন, রাইবোফ্লাবিন (বি২), ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, প্যানটোথেনিক, বি৫, বি৬, গ্লুকোজ, স্নেহপদার্থ, বিভিন্ন ধরনের খনিজ পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেশিয়াম, লোহা, সোডিয়াম, দস্তা, নিয়াসিন (বি৪), ফোলেট (বি৯), ক্যালোরি, সব থেকে বেশি থাকে জলীয় পদার্থ।
ফ্রিল্যান্সিং কি? freelancing ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গাইডলাইন!
শসা খাওয়ার নিয়ম
শসা অন্যান্য খাবার হজম করতে সাহায্য করে কিন্তু শসা নিজে হজম হতে অনেক সময় লাগে।
শসা খাওয়ার আগে প্রথমেই ভালোভাবে ধুয়ে দুপাশ থেকে অল্প করে কিছু অংশ কেটে নিন। যদি এর উপরের ত্বক খেতে কারো সমস্যা না হয়ে থাকে তাহলে উপরের ত্বকটি ছিলে ফেলার প্রয়োজন নেই কারণ চিকিৎসকরা বলেন Cucumber শসার উপরিত্বকে রয়েছে ফাইবার যা আমাদের জন্য অনেক উপকারী। প্রতিদিন একটি শসা খেলেই আপনার শরীরের অনেক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। একটি গবেষণায় দেখা গেছে হাফ কাপ ছোট করে কাটা শসায় রয়েছে ১.৯ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ০.৩ গ্রাম ফাইবার, ০.৩ গ্রাম প্রোটিন। তাই দিনে একটি শসাই যথেষ্ট।
শসা কখন খাওয়া উচিত
Cucumber শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিয়ম করে আমাদের শসা খাওয়া উচিৎ। শসা যেহেতু নিজে হজম হতে বেশি সময় নেয় তাই শসা রাতে ঘুমানোর ঠিক আগে না খাওয়াই উচিত। বরং রাতের খাবারের ২০-৩০ মিনিট আগে খেলে তা অনেকক্ষণ পেটে থাকবে এবং রাতের খাবার অনেকটাই হালকা হবে। এবং তা ওজন কমাতে সাহায্য ও করবে।
আর সকালে খালি পেটে শসা খাওয়া ঠিক নয় কারন শসায় বিদ্যমান ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম লো ব্লাড প্রেসার এর জন্য দায়ী তাই সকালে খালি পেটে শসা খেলে লো ব্লাড প্রেসার এর অ্যাটাক হতে পারে।
তাই দুপুরে শসার সালাদ বা গোল করে কেটেও শসা খেতে পারেন।
শসা খাওয়ার উপকারিতা
১. শসা তে রয়েছে ভিটামিন এ বি ও সি যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
২. Cucumber শসার মধ্যে ৯৫ ভাগ পানি বিদ্যমান থাকায় শসা দেহের পানির ঘাটতি পূরণ করে। কখনো যদি এমন হয়ে থাকে যে আপনি দিনে পানি খুব কম খেয়েছেন তাহলে সেই ঘাটতি পূরণের জন্য আপনি শসা খেতে পারেন।
৩. শসায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, এবং সিলিকন থাকায় তারা ত্বকের পরিচর্যার জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখে।
৪. শসায় উচ্চমাত্রায় পানি ও ফাইবার রয়েছে এবং রয়েছে নিম্নমাত্রার ক্যালরি যা আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৫. শসায় রয়েছে ফাইবার এবং ফ্লুইডসমৃদ্ধ এলিমেন্টস যা শরীরে পানির পরিমাণ বাড়ায় এবং এতে আরো রয়েছে স্টেরল নামের এক ধরনের উপাদান যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এবং পটাশিয়াম ম্যাগনেশিয়াম ফাইবার থাকার কারণে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে।
৬. Cucumber শসার রয়েছে এরেপসিন নামক এনজাইম যা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ও দূর করে।
৭. শসায় বিদ্যমান পানি আমাদের দেহের বর্জ্য এবং বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে সাহায্য করে যা আমাদের রক্তকে পরিষ্কার করে এবং এর পাশাপাশি Cucumber শসার রস আলসার, গ্যাসট্রাইটিস, এসিডিটির ক্ষেত্রে উপকারী ভূমিকা পালন করে।
৮. শসা শরীরের ইউরিক এসিডের মাত্রা ঠিক রাখে, যা আমাদের কিডনিকে রাখে সুস্থ এবং সতেজ।
৯. এছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে, কোলেস্টেরল কমিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
১০. শসাতে বিদ্যমান খনিজ সিলিকা আমাদের চুল এবং নখকে সতেজ ও শক্তিশালী করে তোলে।
১১. আমাদের চোখের নিচে অনেক সময় কালো দাগ হয়ে যায় ঘুম কম হবার দরুন, সেক্ষেত্রে শসা গোল করে কেটে সেখানে লাগিয়ে রাখলে ময়লা অপসারণ হয় এবং এতে চোখের জ্যোতিও বৃদ্ধি পায়।
১২. মিনারেল সমৃদ্ধ শসা আমাদের নখ ভালো রাখতে এবং দাঁত ও মাড়ির সমস্যা নিরসনে সাহায্য করে। মাথা ধরা থেকে নিষ্কৃতি দেয়, গেটেবাত থেকে মুক্তি দেয়, কিডনি, ইউরিনারি ব্লাডার, লিভার ও প্যানক্রিয়াসের সমস্যায় কার্যকর ভূমিকা পালন করে।এছাড়া জরায়ু,স্তন এবং বিভিন্ন স্থানে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
১৩.দাউদ এক্সিমার মতো ত্বকের নানা সমস্যা নিরসনে ও কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে শসা।
১৪. শসা মুখের দূর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। মুখের ভিতরে থাকা বজ্র পদার্থ, টক্সিন এবং দূষিত গন্ধ দূর করতে শসা কার্যকরী ভুমিকা পালন করে। এর জন্য একটি শসা গোল করে কেটে এর এক টুকরো অথবা আধ টুকরো জিভের নিচে দিয়ে রাখতে হবে। তখন শসা ব্যাকটেরিয়ার সাথে ফাইট করে গন্ধ দূর করতে সাহায্য করবে।
১৫. শসায় অধিক পরিমাণে ফসফরাস রয়েছে যা আমাদের শরীরের হরমোনাল ব্যালান্স করতে সাহায্য করে। আমাদের নিত্যদিনকার ডায়েটে শসা যুক্ত করার মাধ্যমে আমাদের শরীরের প্রতিদিনকার প্রয়োজনীয় প্রায় চার পার্সেন্ট ফসফরাস এর প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা সম্ভব।
ডিজিটাল Marketing মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং কেন করবেন?
সৌন্দর্য বর্ধনের Cucumber শসার ভূমিকা
অনেকের রাতে ঘুম কম হবার দরুন চোখের ঠিক নিচে কালো দাগ হয়ে যায় যাকে বলে ডার্ক সার্কেল। এই ডার্ক সার্কেল পরিষ্কার করতে শসা অনন্ত উপকারী ভূমিকা পালন করে। শসা গোল চাকতি করে কেটে তা চোখের উপর দিয়ে ১০-১৫ মিনিট শুয়ে থাকুন।এরকম সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার অবশ্যই করুন।
শসা প্রচুর পরিমাণে খনিজ সিলিকা এবং মিনারেল সমৃদ্ধ হওয়ায় আমাদের নখের জন্য অনেক ভালো কাজ করে।যারা নখ বড় এবং সুন্দর রাখতে পছন্দ করেন তাদের নখ শক্ত করতে শসা দারুন ভূমিকা পালন করে।
যেহেতু শসা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং দেহের ভেতরে থাকা বজ্র পদার্থ নিষ্কাশন করে থাকে সেহেতু আমাদের হজম শক্তিকেও বৃদ্ধি করে। তাই আমাদের যখন পেট পরিষ্কার থাকে, এবং তখন আমাদের ব্রণ হবার সম্ভাবনা কমে যায়। আমার আরো দুটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট ব্রণ কেন হয় এবং ব্রণ দূর করার উপায় এখনই পড়ে নিন।
চুলের যত্নে শসা
আপনারা জেনে অবাক হবেন চুলের যত্নে ও Cucumber শসার ভূমিকা রয়েছে অপরিসীম।
প্রতিদিন যদি শসার রস দিয়ে চুল ধোয়া হয় সেটা চুলকে মজবুত করতে সহায়তা করে। শসায় বিদ্যমান ভিটামিন ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করে। এর পাশাপাশি শ্যাম্পু ব্যবহার করার সময় এর সাথে Cucumber শসার রস মিক্স করলে চুল সাইনি হয়। এবং রেগুলার শসা খেলে ত্বক যেমন হাইড্রেট হয় তেমনি চুল পড়া বন্ধ হয়।
শসায় বিদ্যমান ভিটামিন এ, সি এবং সিলিকা চুল ঘন করতে সহায়তা করে।এবং শসার রস সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম মাথার স্কাল্প এ ব্যবহার করলে চুল মজবুত এবং মসৃণ হয়।
চুলের যত্নে আমার নিজের এক্সপেরিমেন্ট করা তথ্য নিয়ে লেখা চুল পড়া বন্ধ ও ঘন করার উপায়, খুশকি দূর করার উপায় প্রাকৃতিকভাবে এবং চুল সিল্কি করার উপায় এই পোস্টগুলো আপনার অবশ্যই পড়া উচিৎ।
ওজন কমাতে Cucumber শসার ভূমিকা
শসার উপকারিতার প্রশ্ন আসতেই সবার প্রথম যেটা মাথায় আসে সেটি হল শসা ওজন নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে। শসা প্রচুর পরিমাণে মিনারেলস এবং ফাইবার সমৃদ্ধ এবং এতে পানির পরিমাণ এবং ভিটামিনস অনেক বেশি হাওয়ায় তা অনেকক্ষণ আমাদের পেটে তা মজুদ করে রাখে যার হলে ক্ষুধাবোধ কম হয়।
শসা শরীরের মেটাবলিক রেইট বাড়ায় ওজন হ্রাস এর মাধ্যমে। একটি মিডিয়াম সাইজের শসায় মাত্র ২৪ কিলোক্যালরি থাকে যা শশা কে একটি লো ডেনসিটি ফুড বানায় এবং প্রতিদিনের ডায়েটে শসা রাখলে তা আমাদের ওজন হ্রাসে সহায়তা করে।
খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে শসা খেতে হলে তা জুস করে খাওয়া ভালো। সকালে খালি পেটে লেবু এবং Cucumber শসার রসের জুস ওজন কমাতে সহায়তা করে।এবং খালি পেটে অন্যান্য অনেক উপাদান এর সাথে শসা মিশিয়ে সালাদ বানিয়েও খাওয়া যেতে পারে কিন্তু সকাল ভোরে অন্যান্য নাস্তা বা খাবার না খেয়ে শুধুমাত্র শসা খেলে তা আমাদের লো ব্লাড প্রেসার এর জন্য অনেকটাই দায়ী হতে পারে।অনেক সময় তা অনেকের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হয়।
এবং যেহেতু শসা ওজন হ্রাসে সহায়তা করে সেহেতু কোন খাবার খাওয়ার পূর্বে অর্থাৎ দুপুর এবং রাতের খাবারের ২০-৩০ মিনিট পূর্বে চাইলে শসা খাওয়া যেতে পারে।
রাতে শসা খাওয়ার উপকারিতা
রাতে ঘুমানোর আগে শসা খাওয়া ঠিক নয় রাতে শসা খেতে হলে হয় সন্ধ্যায় সালাত বানিয়ে অথবা রাতের খাবারের পূর্বে শসা গোল করে কেটে খেয়ে নিতে পারেন এতে করে ডিনার কম করে খাওয়া হয় এবং শরীরে মেদ জমে না কম ক্যালরি গ্রহণ এর ফলে।
ঠিক ঘুমানোর আগে ডিনার বা অন্যান্য খাবার যেমন গ্রহণ করা উচিত নয় তেমনি শসাও খাওয়া উচিত নয়।কিন্তু ২-৪ ঘন্টা আগে খেতে পারেন যাদের হজম ক্রিয়া ভালো।
Cucumber শসার রসের এবং জুসের উপকারিতা
শসায় বিদ্যমান মিনারেলস শরীরে ফ্লুইড ব্যালেন্স করতে সহায়তা করে।
শসার রস আলসার,গ্যাসট্রাইটিস, এসিডিটির ক্ষেত্রে উপকারী।
গেটেব্যাথার জন্য শসা এবং গাজর জুস করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
শসার রস চুল ঘন এবং মজবুত করতে সহায়তা করে।
Cucumber শসার জুস শরীরে পটাশিয়ামের ব্যালেন্স এর নিশ্চয়তা দেয় এবং হাই ব্লাড প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণ করে।
শসার অপকারিতা
অনেকেই শুধুমাত্র শসা খেয়ে ওজন কমাতে চান।
আর এর জন্য তারা অন্যান্য অনেক খাবার না খেয়ে যখন ক্ষুধা বোধ হয় তখন শুধুমাত্র শসা খেয়েই দিন পার করে দিতে চান। শসা ফাইবার সমৃদ্ধ এবং লো ক্যালরির খাবার হওয়ার কারণে ওজন কমালেও অন্যান্য খাবার গ্রহণ বন্ধ করার ফলে শরীরে দেখা দেয় নানা ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি। টানা একমাস যদি ওজন কমানোর জন্য শুধুমাত্র শসা খেয়ে থাকেন তাহলে তার শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ কমিয়ে দিবে এবং শরীরকে দুর্বল করে দিবে।তাই ডায়েট চার্টে শসাকে অন্যান্য অনেক খাবারের পাশাপাশি রাখুন।
আবার অনেকের সারাদিন প্রচুর পরিমাণে শসা খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিক, বদহজম, পেটে ব্যথা, পেট ফাঁপা, বমিভাব এরকম নানা সমস্যার দেখা দিতে পারে।
A9 মিনি camera ক্যামেরা
Conclusion
এতক্ষণ আমরা Cucumber শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। সবসময় মনে রাখবেন পৃথিবীতে কোন কিছুই শতভাগ উপকারী হতে পারে না। তবে প্রাকৃতিক উপাদান গুলো যদি আমরা সঠিক নিয়মে গ্রহণ করতে পারি তাহলে এর শতভাগ উপকার আমরা পাবো। তাই এই পোস্ট টি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিজে জানুন এবং অন্যদের জানতে সাহায্য করতে এই পোস্টটি শেয়ার করুন। পরবর্তীতে আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট নিয়ে আসব। নিয়মিত আমার ব্লগ ফলো করুন। ধন্যবাদ।