সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে SEO সার্চ ইঞ্জিন হল এমন একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা ইন্টারনেটের বিশাল তথ্যের ভান্ডার থেকে আপনার প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করে দেয়। আপনি যখন কোনো কিছু সার্চ করেন, তখন সার্চ ইঞ্জিনটি আপনার দেওয়া শব্দগুলো (কিওয়ার্ড) বিশ্লেষণ করে এবং তারপর ইন্টারনেটের বিলিয়ন বিলিয়ন ওয়েব পেজ স্ক্যান করে।
search engine সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে?
আপনি এই প্রশ্নের মধ্যেই যে কোন একটি প্রশ্নের উত্তর খুজতেছেন আশা করি এই পোস্টেই পেয়ে যাবেন
- SEO
- সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কি এবং এটি কিভাবে কাজ করে?
- Search Engine Optimisation?
- SEO এর পূর্ণরূপ হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন?
- এর সংক্ষিপ্ত রূপ হিসেবে আমরা বলে থাকি এসইও( SEO )?
- সার্চ ইঞ্জিন কি?
- সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কিভাবে কাজ করে?
- সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন আমরা কিভাবে ব্যবহার করতে পারি?
- বর্তমান সময়ে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন আমাদের কি কি কাজে লাগতে পারে?
- এই আধুনিক যুগে এসে ২০২৫ সালে আমরা এর মুখোমুখি কিভাবে হবো?
সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে?
সাধারণত অনলাইন হতে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য প্রত্যেকটি search engine সার্চ ইঞ্জিনের এক ধরনের সফটওয়ার থাকে। এই সফটওয়ারকে search engine সার্চ ইঞ্জিনের ভাষায় ওয়েব ক্রলার বা রোবট বা বট বলা হয়। একটি ওয়েব ক্রলার বা বট এর প্রধান কাজ হচ্ছে অনলাইনে যত ওয়েবসাইট আছে সেগুলোতে ঘুরে ঘুরে বাড়ানো এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইট/ব্লগ হতে তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে সার্চ ইঞ্জিনের তথ্য ভান্ডারে মজুদ রাখা।
যখন কেউ কোন তথ্য খুঁজে পাওয়ার জন্য search engine সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে, তখন সার্চ ইঞ্জিন তার ডাটাবেজ চেক করে এবং সার্চ ইঞ্জিনের ডাটাবেজ থেকে আমাদের সামনে ফলাফল প্রদর্শন করে।
আসলে সার্চ ইঞ্জিনের ভাষায় এ সব বিষয় ব্যাখ্যা করলে, আমার মত যারা আছেন, তারা এসব বিষয় সহজে বুঝতে পারবেন না। সেই জন্য সার্চ ইঞ্জিনের ভাষায় বিশ্লেষণ না করে সকলের বুঝার সুবিধার্তে বিষয়টি সহজভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছি।
search engine সার্চ ইঞ্জিনের তথ্য সংগ্রহ করার ধাপসমূহ
সাধারণত একটি search engine সার্চ ইঞ্জিন তথ্য সংগ্রহ করার কাজটি তিনটি ধাপে করে থাকে। যেমন- ক্রলিং, ইনডেক্সিং ও ফলাফল প্রদান।
ক্রলিং
প্রথম ধাপে search engine সার্চ ইঞ্জিন তার ক্রলার বা বট-কে বিশ্বের প্রতিটি ওয়েবসাইটে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য পাঠায়। দ্বিতীয় ধাপে ওয়েব ক্রলার বা বট প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটের কনটেন্ট বা পোস্ট crawl করে। একটি ওয়েবসাইটের পোস্টের ভীতরে যত ধরনের লেখা, ইমেজ ও ভিডিও থাকে সেগুলো ক্রল করার মাধ্যমে তথ্য ভান্ডারে ইনডেক্স হয়।
প্রত্যেকটি search engine সার্চ ইঞ্জিনের এক ধরনের Web Crawlers সফটওয়ার রয়েছে। সার্চ ইঞ্জিনের ভাষায় এগুলিকে “রোবট বা বট” বলা হয়ে থাকে। এই Web Crawlers ইন্টারনেটের যত ওয়েবসাইট রয়েছে সেগুলির প্রত্যেকটি লিংক প্রতিনিয়তই ভিজিট করে। প্রতিবার একটি সাইট ভিজিট করার সময় ঐ সাইটের নতুন লিংকগুলো সংগ্রহ করে এবং Dead Link সার্ভার হতে মুছে দেয়। এভাবে প্রতিটি সাইট প্রতিনিয়তই Crawl হতে থাকে এবং নিত্য নতুন তথ্য তাদের search engine সার্চ ইঞ্জিনের সার্ভারে মজুদ হতে থাকে।
এগুলো পড়তে পারেন-
- কিভাবে blog ব্লগের Privacy Policy পেজ তৈরি করবেন?
- সম্প্রতি সময়ের ১০ টি গুরুত্বপূর্ণ Google SEO টিপস – 2021
- কিভাবে একটি Blog Post সার্চ ইঞ্জিনে দ্রুত Index করতে হয়?
- Youtube ইউটিউব এসইও: কিভাবে ইউটিউব ভিডিও ভিউ বাড়বে?
ইনডেক্সিং
যেকোনো search engine সার্চ ইঞ্জিনের ক্রলার বা রোবট ক্রল করার মাধ্যমে পেজকে ইনডেক্স করে নেয়। ইনডেক্স বিষয়টি বুঝানোর জন্য ছোট্ট একটি উদাহরণ দিচ্ছি। ধরুন- আপনার একটি মোবাইলের দোকান আছে। আপনার দোকানে শুধুমাত্র এক ধরনের মোবাইল না রেখে বিভিন্ন কোম্পানির মোবাইল বিক্রি করেন (যেমন- সামসং, শায়মি, অপ্প ইত্যাদি)। এ ক্ষেত্রে আপনি সব ধরনের ফোন একসাথে এলামেলো করে না রেখে ফোনের কোয়ালিটি ও কোম্পানি অনুসারে আলাদা আলাদা সাজিয়ে রাখবেন। তাহলে কাস্টমারের চাহিদা অনুসারে সহজে যেকোন মোবাইল কাস্টমারদের দেখাতে পারবেন।
ঠিক একইবাবে এই পুরো বিশ্বে যত ওয়েবসাইট বা ব্লগ রয়েছে প্রত্যেকটা ওয়েবসাইটের মালিক আলাদা আলাদা বিষয়ে লিখে থাকেন। এখানে সার্চ ইঞ্জিন বট সবগুলো ওয়েবসাইটের বিষয় অনুসারে তাদের তথ্য ভান্ডারে আলাদা আলাদা সাজিয়ে রাখে। তারপর কোন ব্লগ তাদের তথ্য ভান্ডারের সবার উপরে রাখবে সেটা ওয়েবসাইটের মানের উপর নির্ভর করে। মূলত সার্চ ইঞ্জিনের এই প্রক্রিয়াটিকে ইনডেক্সিং বলা হয়। ইনডেক্সিং এর ভীতরে অনেকগুলো বিষয় থাকে। যেগুলো এখনে বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কি? What is SEO?
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization) এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে যে কেউ সার্চ ইঞ্জিন ব্যাবহার করে একটি ওয়েব সাইটকে বিনামূল্যে সকলের কাছে পৌছে দিতে পারে। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization) – কে সংক্ষেপে SEO এসইও বলে। ইন্টারনেটের ব্যবহার যত বাড়ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization) বা এসইও এর জনপ্রিয়তা তত বাড়ছে। অনেকে একে ফ্রিল্যান্সিং কাজ হিসেবে ব্যবহার করছেন। এছাড়া যারা ব্লগ পরিচালনা করছেন তাদের ব্লগের পরিচিতি বাড়ানোর প্রয়োজন তো আছেই। ইন্টারনেটে ব্যবসা বাণিজ্য করে টিকে থাকার জন্য এসইও (SEO) এর গুরুত্ব অপরিসীম।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের প্রধান প্রধান উদ্দেশ্য গুলোর মধ্যে রয়েছে-
একটি সাইটকে সকলের কাছে সহজে পৌছে দেওয়া। ওয়েব সাইটের জন্য প্রিয়তা বৃদ্ধি করা। সাইটের ভিজিটর বা ট্রাফিক বৃদ্ধি করা। বিভিন্ন ধরনের অনলাইন থেকে আয় করার পণটাটফরম হিসেবে কাজ করে। তথ্য বিনিময় ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার শক্ত ভিত হিসেবে কাজ করে। সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে।
সার্চ ইঞ্জিনগুলো তৈরি হয়েছে, মানুষের তথ্য খুজে পাওয়ার জন্য। সেজন্য কোন কিছু সার্চ দিলে যাতে সবচাইতে সেরা তথ্য খুজে পাওয়া যায় সেজন্য সার্চইঞ্জিন সাইটগুলো কিছু পোগ্রাম তৈরি করে রাখে। যেটি সকল সাইটগুলোর মধ্যে কিছু বিষয় তুলনা করে সেরা সাইটগুলোকে সার্চের সামনে নিয়ে আসে। সেরা সাইট নির্বাচন করার জন্য তারা দেখে ওয়েবসাইটটির মানসম্মত কিনা, ওয়েবসাইটের তথ্য সকলের জন্য প্রয়োজনীয় কিনা, ওয়েভসাইটটি কেমন জনপ্রিয়। এগুলোসহ আরও কিছু বিষয় নিয়ে ফলাফল প্রদর্শন করে।
গুগল কুয়েরী প্রসেসর
এটি সর্বশেষ অংশ। এটাই আমাদের সার্চ রেজাল্ট প্রসেসিং করে। কুয়েরী প্রসেসর কয়েকটি অংশে বিভক্ত। ইউজার ইন্টারফেস, কুয়েরী ইঞ্জিন, রেজাল্ট ফরমেটর ইত্যাদি। গুগলের ওয়েবপেজ র্যাংকিং সিস্টেমের নাম পেজর্যাংক। যে পেজের পেজর্যাংক যত বেশী সেটা সার্চ রেজাল্ট এ তত উপরে থাকে। গুগলবট যেহেতু টেক্সটের সাথে পেজ কোড ও ক্রলিং করে তাই ইউজার চাইলে সার্চ টার্মটির অবস্থানও নির্দিষ্ট করে দিতে পারে যে সেটা লিংকে থাকবে,টাইটেলে থাকবে না টেক্সটে থাকবে। শুধু টার্মের উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে রেজাল্ট না দেওয়ার কারণেই গুগলের সার্চ রেজাল্টের মান এত উন্নত।
বিখ্যাত কয়েকটি সার্চ ইঞ্জিনের নাম হলো
গুগল (google), ইয়াহু (yahoo),বিং( bing) ইত্যাদি । এই সব সাইটে আপনি একটি শব্দ সার্চ বক্সে লিখে সার্চ বাটনে ক্লিক করলে , কয়েক সেকেন্ড এর মধ্য অনেক ওয়েবসাইটের লিংক চলে আসে, যেসব লিংকে গেলে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া যায় ।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ওয়েব ডেভলপারদের জন্য একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোয়ালিটি ট্রাফিক সার্চ ইঞ্জিন থেকে ব্লগে আসে ফলে ব্লগ বিজ্ঞাপন ফ্রেন্ডলি হয়ে উঠে ফলে পাঠক সন্তুষ্ট হয় এবং ব্লগার বিজ্ঞাপন থেকে উপকৃত হয়। প্রক্রিয়াটি শুধুমাত্র এইটুকুর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর থেকে আরো অনেক সুবিধা পাওয়া যায়।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন মুলত দুই ধাপের মাধ্যমে হয়ে থাকে-
অন পেজ অপটিমাইজেশন
অফ পেজ অপটিমাইজেশন
১) অন পেজ অপটিমাইজেশন
ব্লগ বা ওয়েব পেজের মধ্যে আমরা যে সকল অপটিমাইজেশন করে থাকি তাকেই অন-পেজ অপটিমাইজেশন বলা হয়। অন পেজ অপটিমাইজেশনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল সঠিক কিওয়ার্ড খোঁজা এবং এর ব্যাবহার, মেটা ট্যাগের ব্যবহার, টাইটেলে ট্যাগের ব্যবহার, বর্ণনা ট্যাগের ব্যবহার, কী ওয়ার্ড সমৃদ্ধ কনটেন্ট বনানো এবং এক্সএমএল সাইটম্যাপ যুক্ত করণ ইত্যাদি।
২) অফ পেজ অপটিমাইজেশন
অফ পেইজ অপটিমাইজেন একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং স্থায়ী সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেন যার মাধ্যমে প্রতিযোগিতামুলক রেঙ্কিং এ একটি সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম সারিতে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। সাধারনত উন্নত ব্যাকলিংক, আর্টিকেল মার্কেটিং, ফোরাম পোস্টিং, ইত্যাদির মাধ্যমে অফ পেইজ অপটিমাইজেশন করা হয়। অফ পেইজ অপটিমাইজেশন শুধুমাত্র একটি পাতায় নয় এর সঠিক ব্যাবহার আপনার পুরো ব্লগের উপরে পরবে অর্থাৎ এর ফলে আপনার ব্যাকলিংক বৃদ্ধি পাবে এবং পেজ রেঙ্ক বেড়ে যাবে।
তাই চেষ্টা করা উচিত সাইট এর কন্টেনটগুলো যেন অন্যান্য সাইট থেকে একটু আলাদা হয়। এর পরে আপনি আপনার কন্টেনট অনুযায়ী কিছু জনপ্রিয় কী- ওর্য়াড আপনার কন্টেনট পেইজ এ যোগ করে দিন।
এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন বলতে আমরা সোজা কথায় বুঝি সার্চ ইঞ্জিনের সাথে ওয়েবসাইটের ভাল সম্পর্ক তৈরি করা। সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন ছাড়া একটা ওয়েবসাইট কখনোই পূর্ণতা পায় না কারন কোটি কোটি সাইটের অবস্থান প্রথম সারিতে তৈরি করতে হলে এর বিকল্প নেই।