
রমজান Ramadan মাসে সেহরি ও ইফতার মুসলমানদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। সেহরি হল সুবহে সাদিকের পূর্বে শেষ রাতের খাবার, যা রোজাদারকে সারাদিন রোজা রাখার জন্য শক্তি যোগায়।
অন্যদিকে, ইফতার হল সূর্যাস্তের পর রোজা ভঙ্গ করার মুহূর্ত, যা রোজাদারের জন্য রহমত ও কল্যাণ বয়ে আনে। এই দুই সময় ইসলামের সুন্নত ও মাসনুন দোয়াগুলো পালন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নিত্য নতুন ইনকামের নিউজ পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জয়েন হতে পারেন Link |
সেহরির সুন্নত ও গুরুত্ব
১. সেহরির বরকত
হাদিসে এসেছে, “সেহরির খাবার গ্রহণ কর, কেননা এতে বরকত রয়েছে।” (সহিহ বুখারি, ১৯২৩)
২. সেহরি দেরি করে খাওয়া
রাসুল (সা.) দেরিতে সেহরি করতেন এবং দ্রুত ইফতার করতেন। সেহরির শেষ সময়ের কাছাকাছি খাওয়া সুন্নত।
৩. হালাল ও পরিমিত খাবার গ্রহণ
সেহরিতে হালাল ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। রাসুল (সা.) খেজুর খেতেন এবং পানি পান করতেন।
৪. সেহরির নিয়ত করা
সেহরি করার সময় নিয়ত করা সুন্নত। যদিও রোজার জন্য নিয়ত অন্তরের ব্যাপার, তবে মুখে বলা উত্তম:
নিয়ত: “নাওয়াইতু আন আসুমা গদান লিল্লাহি তাআলা।” (অর্থ: আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আগামীকাল রোজা রাখার নিয়ত করলাম।)
৫. সেহরির দোয়া
সেহরির নির্দিষ্ট দোয়া নেই, তবে এই আয়াত পড়া যেতে পারে:
“রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানাহ, ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাহ, ওয়া কিনা আজাবান নার।” (অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের দুনিয়াতে কল্যাণ দান কর এবং আখিরাতে কল্যাণ দান কর, আর আমাদের জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা কর।) (সূরা বাকারা: ২০১)
ইফতারের সুন্নত ও গুরুত্ব
১. ইফতার দ্রুত করা
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “মানুষ ততক্ষণ কল্যাণে থাকবে, যতক্ষণ তারা ইফতারে তাড়াহুড়া করবে।” (সহিহ বুখারি, ১৯৫৭)
২. খেজুর বা পানি দিয়ে ইফতার করা
হাদিসে এসেছে, “রাসুল (সা.) ইফতার করতেন পাকা খেজুর দ্বারা, যদি তা না পাওয়া যেত, তবে শুকনো খেজুর দ্বারা, আর যদি এটাও না পাওয়া যেত, তবে তিনি কয়েক ঢোক পানি পান করতেন।” (সুনানে আবু দাউদ, ২৩৫৬)
৩. ইফতারের দোয়া
ইফতারের আগে দোয়া করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
ইফতারের দোয়া:
اللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ
“আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু, ওয়া বিকা আমানতু, ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালতু, ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু।”
(অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি, তোমার ওপর ঈমান এনেছি, তোমার ওপর নির্ভর করেছি এবং তোমার দেওয়া রিজিক দিয়ে ইফতার করলাম।)
৪. বেশি বেশি দোয়া করা
রাসুল (সা.) বলেছেন, “তিন ব্যক্তির দোয়া কখনো ফেরত দেওয়া হয় না: ন্যায়পরায়ণ শাসকের, রোজাদারের যখন সে ইফতার করে এবং মজলুমের দোয়া।” (তিরমিজি, ২৫২৫)
৫. গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা
রমজানের Ramadan ইফতারের মুহূর্ত অত্যন্ত পবিত্র, তাই এই সময় গীবত, মিথ্যা, অহংকার থেকে বিরত থাকা জরুরি।
রমজানের মাসনুন দোয়া
১. রমজানের প্রথম দশকের দোয়া
اللَّهُمَّ ارْحَمْنِي
(অর্থ: হে আল্লাহ! আমাকে দয়া করুন।)
২. রমজানের দ্বিতীয় দশকের দোয়া
اللَّهُمَّ اغْفِرْلِي ذُنُوبِي
(অর্থ: হে আল্লাহ! আমার গুনাহ মাফ করুন।)
৩. রমজানের Ramadan শেষ দশকের দোয়া
اللَّهُمَّ أَجِرْنِي مِنَ النَّارِ
(অর্থ: হে আল্লাহ! আমাকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করুন।)
উপসংহার
সেহরি ও ইফতার শুধুমাত্র খাবার গ্রহণের নাম নয়, বরং এগুলো ইবাদতের অংশ। রাসুল (সা.)-এর সুন্নত অনুসরণ করলে এতে বরকত বৃদ্ধি পায় এবং আমাদের রোজা পরিপূর্ণ হয়। তাই আমাদের উচিত সঠিক নিয়মে সেহরি ও ইফতার করা, দোয়া পড়া এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা।